CKEditor 5 Sample
ঢাকা ২০ নভেম্বর, ২০২৫

শেষ বলে তাইজুলের আঘাত, প্রথম দিন বাংলাদেশের প্রাপ্তি ৮ উইকেট

#
news image

সিলেটে প্রথম টেস্টে দিনের শেষ বলে হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। শেষ বলে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো আয়ারল্যান্ডের অষ্টম উইকেট জুটি ভেঙেছেন তাইজুল। এই জুটিই আইরিশদের তিনশ রানের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছিল। জুটি ভাঙায় ৯০ ওভারে প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৭০ রানে প্রথম দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। 

টস জিতে ব্যাট করে শুরুর ওভারে হাসানের বলে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তার পর বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৯৬ রানের জুটি গড়েন পল স্টার্লিং ও কেড কারমাইকেল। 

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে এই জুটি ভাঙে বাংলাদেশ। ৬০ রানে সেট হয়ে যাওয়া পল স্টার্লিংকে আউট করেন নাহিদ। এরপর নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকেও সাজঘরে পাঠান মিরাজ। দ্রুত দুই উইকেট পড়লেও অভিষিক্ত কেড কারমাইকেল দলকে চাপে পড়তে দেননি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নেন নিজের প্রথম টেস্ট ফিফটি। মাঝের দিকে ক্যাম্ফারের সঙ্গে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটিও গড়েন তিনি। কিন্তু ৫৯ রানে এসে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে মিরাজের বলে কাটা পড়েন কারমাইকেল।  

তার পর পঞ্চম উইকেটে ক্যাম্ফার ও টাকার গড়ে তোলেন আরও ৫৩ রানের জুটি। ৪৪ রানে ব্যাট করতে থাকা ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে ছন্দপতন ঘটান হাসান মুরাদ। অভিষিক্ত এই স্পিনার আরও একবার আঘাত হানলে ফিরে যান আরেক সেট ব্যাটার টাকারও (৪১)। 

তার পর ধস নামে দলটির ইনিংসে। দ্রুত সময়ে মিরাজের তৃতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন ম্যাকব্রিন। তাতে সপ্তম উইকেটের পতন হলেও অভিষিক্ত জর্ডান নিল ও ম্যাককার্থির জুটিতে যোগ হয় ৪৮ রান। তাদের জুটি আয়ারল্যান্ডকে ২৫০ রানের গণ্ডি পার করতে সাহায্য করেছে। 

অভিষেকে সবচেয়ে নজরকাড়া পারফরমার ছিলেন হাসান মুরাদ। তাছাড়া বাংলাদেশের পাঁচ বোলারই আজ উইকেট পেয়েছেন। মিরাজ নিয়েছেন তিনটি, মুরাদ শেষ করেছেন দুটি উইকেট নিয়ে। একটি করে নিয়েছেন হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও তাইজুল ইসলাম। 

তৃতীয় সেশনে আইরিশদের ভালোভাবেই চেপে ধরেছে বাংলাদেশ। হাসান মুরাদ দুই সেট ব্যাটারকে ফেরানোর পর সপ্তম উইকেট পড়তেও সময় লাগেনি। ২২২ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়েছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন (৫)। এটি ছিল মিরাজের তৃতীয় শিকার। 

৪ উইকেটে ১৮৪ রান নিয়ে তৃতীয় সেশন শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্ফার জুটি গড়ে দলের স্কোর দুইশ পার করেছিলেন। ৫৩ রানের এই জুটিকে আর বেশি বড় হতে দেননি অভিষিক্ত স্পিনার হাসান মুরাদ। ৬৩.৩ ওভারে ক্যাম্ফারকে ৪৪ রানে শান্তর ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি। তিন ওভার পর আবারও আঘাত হানেন। এবার আরেক সেট ব্যাটার লরকান টাকারকে ৪১ রানে স্টাম্পড করিয়েছেন। তাতে মুরাদের ঘূর্ণিতে দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়েছে আইরিশ দল। সফরকারীরা তাদের ষষ্ঠ উইকেট হারায় ২১৯ রানে।

প্রথম সেশনে কঠিন সময় পার করলেও দ্বিতীয় সেশনে ৩ উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। ভেঙেছে দুটি বড় পার্টনারশিপ। 

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই আঘাত হানে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারে তুলে নেয় দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ৬০ রানে সেট হয়ে যাওয়া পল স্টার্লিংকে আউট করেন নাহিদ। এরপর নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকেও সাজঘরে পাঠান মিরাজ। তবে দ্রুত দুই উইকেট পড়লেও অভিষিক্ত কেড কারমাইকেল দলকে চাপে পড়তে দেননি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নেন নিজের প্রথম টেস্ট ফিফটি। মাঝের দিকে ক্যাম্ফারের সঙ্গে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটিও গড়েন তিনি। কিন্তু ৫৯ রানে এসে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে মিরাজের বলে কাটা পড়েন তিনি। 

প্রথম সেশনের মতো এই সেশনেও বাজে ফিল্ডিংয়ের নজির রেখেছে বাংলাদেশ। মুরাদের বোলিংয়ে সহজ একটি ক্যাচ ফেলেন শান্ত। তাতে ১১ রানে জীবন পান টাকার। এরপর টাকার ও ক্যাম্ফার ৩৪ রানের জুটি গড়ে দ্বিতীয় সেশন নির্বিঘ্নে শেষ করেছেন। চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৫৬ ওভারে প্রথম ইনিংসে ১৮৪ রান। ক্যাম্ফার ৩৫ রানে ব্যাট করছেন, টাকার অপরাজিত ২২ রানে। 

সব মিলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ চারটি ক্যাচ হাতছাড়া করেছে। এই সেশনে ৩০ ওভারের খেলা হয়েছে। আয়ারল্যান্ড ৩ উইকেট হারিয়ে যোগ করেছেন ৯০ রান। 

লাঞ্চ থেকে ফিরেই টানা দুই ওভারে উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তার পর অবশ্য প্রতিরোধ গড়ে ইনিংস সামলাতে থাকেন কেড কারমাইকেল ও কার্টিস ক্যাম্ফার। চতুর্থ উইকেটে ৫৩ রানের জুটি গড়েন তারা। যার মূল কারিগর ছিলেন অভিষিক্ত কারমাইকেল। শুরুর টেস্টেই তুলে নিয়েছেন ফিফটি। তাকে ৫৯ রানে থামিয়ে প্রতিরোধ ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আয়ারল্যান্ড চতুর্থ উইকেট হারায় ১৫০ রানে। 

মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন কারমাইকেল। বল ব্যাটের কানায় লেগে বাহুতে স্পর্শ করে বাতাসে উঠলে দুর্দান্ত ক্যাচে সেটা লুফে নেন শান্ত। কিন্তু অনফিল্ড আম্পায়ার বাংলাদেশের আবেদনে মোটেও সাড়া দেননি। রিভিউর পরই সাফল্য পায় স্বাগতিক দল। কারমাইকেলের ১২৯ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার।  

প্রথম সেশনে নিজেদের ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশের। তিনটি ক্যাচ মিস করায় জুটি গড়েন স্টার্লিং ও কারমাইকেল। লাঞ্চ থেকে ফিরেই অবশ্য প্রথম ওভারে স্টার্লিংকে ফিরিয়ে রেকর্ড ৯৬ রানের জুটি ভেঙেছেন নাহিদ রানা। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজও আঘাত হানায় দ্রুত সময়ে দুই উইকেট হারিয়েছে সফরকারী দল।  

২৬.৩ ওভারে নাহিদের গতিতে পরাস্ত হয়ে দ্বিতীয় স্লিপে সাদমানকে ক্যাচ দিয়েছেন স্টার্লিং। তিনি কাটা পড়েন ৬০ রানে। তার ৭৬ বলের ইনিংসে ছিল ৯টি চারের মার।   

পরের ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদী হাসান নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকে (১) এলবিডাব্লিউতে ফিরিয়েছেন। শুরুতে আম্পায়ার আউট দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নেওয়াতে মেলে সাফল্য। তাতে এক রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারায় আইরিশ দল।    
রোদেলা সকালে দুর্দান্ত সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। টস হেরে বোলিংয়ে নেমে নতুন বলে প্রথম ওভারেই আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে শূন্য রানে এলবিডাব্লিউতে ফেরান হাসান মাহমুদ। কে জানতো তিনটি ক্যাচ মিসে প্রথম সেশনে সেটি বাংলাদেশের একমাত্র সাফল্য হয়ে থাকবে! 

নিজেদের ভুলে এরপর কঠিন সময় পার করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ৪৫ মিনিটে তিন-তিনটি ক্যাচ হাতছাড়া করেন ফিল্ডাররা। দু’বার জীবন পান পল স্টার্লিং, একবার অভিষিক্ত ব্যাটার কারমাইকেল। সেই সুযোগটাকেই দারুণভাবে কাজে লাগান তারা। তাদের জুটিতে লাঞ্চে যাওয়ার আগে প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ১ উইকেটে ২৬ ওভারে ৯৪। 

৮ ও ১০ রানে জীবন পাওয়া স্টার্লিং-ই ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক। তাকে এসময় যোগ্য সঙ্গ দেন কারমাইকেল। দু’জন মিলে আয়ারল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির নজির গড়েছেন। আগের সেরাটি ছিল ৭৫ রানের। প্রথম সেশনে এই জুটিতে যোগ হয়েছে ৯৪ রান। স্টার্লিং টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ব্যাট করছেন ৫৮ রানে। কারমাইকেল অপরাজিত ৩০ রানে।  
প্রথম ঘণ্টায় দারুণ বোলিংয়ে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। বিদায় দেন অধিনায়ক বালবার্নিকে। তার পর অবশ্য তিন তিনটি ক্যাচ মিস করেছে বাংলাদেশ। যার সুযোগ নিয়ে আইরিশরা দ্বিতীয় উইকেটে পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি গড়েছে। 

তিন ক্যাচের মধ্যে নাহিদের বলে দুবার বেঁচেছেন স্টার্লিং। তখন স্কোর ছিল ৮ ও ১০। ১০ রানে হাসান মাহমুদের বলে একবার জীবন পান ক্যাড কারমাইকেলও। জীবন পেয়েই তার পর দুজনে মিলে ১৩ ওভারে যোগ করেছেন ১ উইকেটে ৬২ রান। 
টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামলেও প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই আঘাত হেনেছেন পেসার হাসান মাহমুদ। তার বলে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন ওপেনার ও অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি (০)। তিনি রিভিউ নিয়েও অবশ্য রক্ষা পাননি। আয়ারল্যান্ড প্রথম উইকেট হারায় শূন্য রানে। 
সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে শুরুতেই টস হেরেছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে সফরকারী আয়ারল্যান্ড। 

২০১৭ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর থেকে এটি আইরিশদের মাত্র একাদশতম টেস্ট। এর আগে তারা তিনটি জিতেছে, হেরেছে সাতটি। এই সিরিজ দিয়ে ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার তারা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলছে। এর আগেরবার ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সর্বশেষ তারা বাংলাদেশে মুখোমুখি হয়েছিল ২০২৩ সালের এপ্রিলে মিরপুরে। সেখানে তারা চার দিনের মধ্যেই হেরে যায়। তবে সেই পরাজয়ের পর আয়ারল্যান্ড আরও ছয়টি টেস্ট খেলেছে, যার মধ্যে সাম্প্রতিক তিনটিতেই জয় পেয়েছে তারা।

একাদশে কারা: 

বাংলাদেশের হয়ে বামহাতি স্পিনার হাসান মুরাদের টেস্ট অভিষেক হচ্ছে আজ। এর আগে শুধু টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন। 

আইরিশ দলেও অভিষেক হচ্ছে দুজনের। তারা হলেন জর্ডান নিল ও কেড কারমাইকেল। আইরিশদের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে অভিষেক হচ্ছে জর্ডানের। 

বাংলাদেশ একাদশ : সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মেহেদী হাসান, তাইজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, রাহিদ রানা ও হাসান মুরাদ। 

আয়ারল্যান্ড একাদশ: অ্যান্ডি বালবার্নি (অধিনায়ক), পল স্টার্লিং, কেড কারমাইকেল, হ্যারি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্ফার, লরকান টাকান (উইকেট), জর্ডান নিল, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, ব্যারি ম্যাকার্থি, ম্যাথু হামফ্রিজ, ক্রেইগ ইয়াং  

স্পোর্টস ডেস্ক

১১ নভেম্বর, ২০২৫,  5:45 PM

news image

সিলেটে প্রথম টেস্টে দিনের শেষ বলে হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। শেষ বলে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো আয়ারল্যান্ডের অষ্টম উইকেট জুটি ভেঙেছেন তাইজুল। এই জুটিই আইরিশদের তিনশ রানের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছিল। জুটি ভাঙায় ৯০ ওভারে প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৭০ রানে প্রথম দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। 

টস জিতে ব্যাট করে শুরুর ওভারে হাসানের বলে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তার পর বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৯৬ রানের জুটি গড়েন পল স্টার্লিং ও কেড কারমাইকেল। 

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে এই জুটি ভাঙে বাংলাদেশ। ৬০ রানে সেট হয়ে যাওয়া পল স্টার্লিংকে আউট করেন নাহিদ। এরপর নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকেও সাজঘরে পাঠান মিরাজ। দ্রুত দুই উইকেট পড়লেও অভিষিক্ত কেড কারমাইকেল দলকে চাপে পড়তে দেননি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নেন নিজের প্রথম টেস্ট ফিফটি। মাঝের দিকে ক্যাম্ফারের সঙ্গে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটিও গড়েন তিনি। কিন্তু ৫৯ রানে এসে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে মিরাজের বলে কাটা পড়েন কারমাইকেল।  

তার পর পঞ্চম উইকেটে ক্যাম্ফার ও টাকার গড়ে তোলেন আরও ৫৩ রানের জুটি। ৪৪ রানে ব্যাট করতে থাকা ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে ছন্দপতন ঘটান হাসান মুরাদ। অভিষিক্ত এই স্পিনার আরও একবার আঘাত হানলে ফিরে যান আরেক সেট ব্যাটার টাকারও (৪১)। 

তার পর ধস নামে দলটির ইনিংসে। দ্রুত সময়ে মিরাজের তৃতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন ম্যাকব্রিন। তাতে সপ্তম উইকেটের পতন হলেও অভিষিক্ত জর্ডান নিল ও ম্যাককার্থির জুটিতে যোগ হয় ৪৮ রান। তাদের জুটি আয়ারল্যান্ডকে ২৫০ রানের গণ্ডি পার করতে সাহায্য করেছে। 

অভিষেকে সবচেয়ে নজরকাড়া পারফরমার ছিলেন হাসান মুরাদ। তাছাড়া বাংলাদেশের পাঁচ বোলারই আজ উইকেট পেয়েছেন। মিরাজ নিয়েছেন তিনটি, মুরাদ শেষ করেছেন দুটি উইকেট নিয়ে। একটি করে নিয়েছেন হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও তাইজুল ইসলাম। 

তৃতীয় সেশনে আইরিশদের ভালোভাবেই চেপে ধরেছে বাংলাদেশ। হাসান মুরাদ দুই সেট ব্যাটারকে ফেরানোর পর সপ্তম উইকেট পড়তেও সময় লাগেনি। ২২২ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়েছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন (৫)। এটি ছিল মিরাজের তৃতীয় শিকার। 

৪ উইকেটে ১৮৪ রান নিয়ে তৃতীয় সেশন শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্ফার জুটি গড়ে দলের স্কোর দুইশ পার করেছিলেন। ৫৩ রানের এই জুটিকে আর বেশি বড় হতে দেননি অভিষিক্ত স্পিনার হাসান মুরাদ। ৬৩.৩ ওভারে ক্যাম্ফারকে ৪৪ রানে শান্তর ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি। তিন ওভার পর আবারও আঘাত হানেন। এবার আরেক সেট ব্যাটার লরকান টাকারকে ৪১ রানে স্টাম্পড করিয়েছেন। তাতে মুরাদের ঘূর্ণিতে দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়েছে আইরিশ দল। সফরকারীরা তাদের ষষ্ঠ উইকেট হারায় ২১৯ রানে।

প্রথম সেশনে কঠিন সময় পার করলেও দ্বিতীয় সেশনে ৩ উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। ভেঙেছে দুটি বড় পার্টনারশিপ। 

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই আঘাত হানে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারে তুলে নেয় দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ৬০ রানে সেট হয়ে যাওয়া পল স্টার্লিংকে আউট করেন নাহিদ। এরপর নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকেও সাজঘরে পাঠান মিরাজ। তবে দ্রুত দুই উইকেট পড়লেও অভিষিক্ত কেড কারমাইকেল দলকে চাপে পড়তে দেননি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নেন নিজের প্রথম টেস্ট ফিফটি। মাঝের দিকে ক্যাম্ফারের সঙ্গে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটিও গড়েন তিনি। কিন্তু ৫৯ রানে এসে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে মিরাজের বলে কাটা পড়েন তিনি। 

প্রথম সেশনের মতো এই সেশনেও বাজে ফিল্ডিংয়ের নজির রেখেছে বাংলাদেশ। মুরাদের বোলিংয়ে সহজ একটি ক্যাচ ফেলেন শান্ত। তাতে ১১ রানে জীবন পান টাকার। এরপর টাকার ও ক্যাম্ফার ৩৪ রানের জুটি গড়ে দ্বিতীয় সেশন নির্বিঘ্নে শেষ করেছেন। চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৫৬ ওভারে প্রথম ইনিংসে ১৮৪ রান। ক্যাম্ফার ৩৫ রানে ব্যাট করছেন, টাকার অপরাজিত ২২ রানে। 

সব মিলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ চারটি ক্যাচ হাতছাড়া করেছে। এই সেশনে ৩০ ওভারের খেলা হয়েছে। আয়ারল্যান্ড ৩ উইকেট হারিয়ে যোগ করেছেন ৯০ রান। 

লাঞ্চ থেকে ফিরেই টানা দুই ওভারে উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তার পর অবশ্য প্রতিরোধ গড়ে ইনিংস সামলাতে থাকেন কেড কারমাইকেল ও কার্টিস ক্যাম্ফার। চতুর্থ উইকেটে ৫৩ রানের জুটি গড়েন তারা। যার মূল কারিগর ছিলেন অভিষিক্ত কারমাইকেল। শুরুর টেস্টেই তুলে নিয়েছেন ফিফটি। তাকে ৫৯ রানে থামিয়ে প্রতিরোধ ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আয়ারল্যান্ড চতুর্থ উইকেট হারায় ১৫০ রানে। 

মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন কারমাইকেল। বল ব্যাটের কানায় লেগে বাহুতে স্পর্শ করে বাতাসে উঠলে দুর্দান্ত ক্যাচে সেটা লুফে নেন শান্ত। কিন্তু অনফিল্ড আম্পায়ার বাংলাদেশের আবেদনে মোটেও সাড়া দেননি। রিভিউর পরই সাফল্য পায় স্বাগতিক দল। কারমাইকেলের ১২৯ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার।  

প্রথম সেশনে নিজেদের ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশের। তিনটি ক্যাচ মিস করায় জুটি গড়েন স্টার্লিং ও কারমাইকেল। লাঞ্চ থেকে ফিরেই অবশ্য প্রথম ওভারে স্টার্লিংকে ফিরিয়ে রেকর্ড ৯৬ রানের জুটি ভেঙেছেন নাহিদ রানা। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজও আঘাত হানায় দ্রুত সময়ে দুই উইকেট হারিয়েছে সফরকারী দল।  

২৬.৩ ওভারে নাহিদের গতিতে পরাস্ত হয়ে দ্বিতীয় স্লিপে সাদমানকে ক্যাচ দিয়েছেন স্টার্লিং। তিনি কাটা পড়েন ৬০ রানে। তার ৭৬ বলের ইনিংসে ছিল ৯টি চারের মার।   

পরের ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদী হাসান নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকে (১) এলবিডাব্লিউতে ফিরিয়েছেন। শুরুতে আম্পায়ার আউট দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নেওয়াতে মেলে সাফল্য। তাতে এক রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারায় আইরিশ দল।    
রোদেলা সকালে দুর্দান্ত সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। টস হেরে বোলিংয়ে নেমে নতুন বলে প্রথম ওভারেই আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে শূন্য রানে এলবিডাব্লিউতে ফেরান হাসান মাহমুদ। কে জানতো তিনটি ক্যাচ মিসে প্রথম সেশনে সেটি বাংলাদেশের একমাত্র সাফল্য হয়ে থাকবে! 

নিজেদের ভুলে এরপর কঠিন সময় পার করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ৪৫ মিনিটে তিন-তিনটি ক্যাচ হাতছাড়া করেন ফিল্ডাররা। দু’বার জীবন পান পল স্টার্লিং, একবার অভিষিক্ত ব্যাটার কারমাইকেল। সেই সুযোগটাকেই দারুণভাবে কাজে লাগান তারা। তাদের জুটিতে লাঞ্চে যাওয়ার আগে প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ১ উইকেটে ২৬ ওভারে ৯৪। 

৮ ও ১০ রানে জীবন পাওয়া স্টার্লিং-ই ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক। তাকে এসময় যোগ্য সঙ্গ দেন কারমাইকেল। দু’জন মিলে আয়ারল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির নজির গড়েছেন। আগের সেরাটি ছিল ৭৫ রানের। প্রথম সেশনে এই জুটিতে যোগ হয়েছে ৯৪ রান। স্টার্লিং টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ব্যাট করছেন ৫৮ রানে। কারমাইকেল অপরাজিত ৩০ রানে।  
প্রথম ঘণ্টায় দারুণ বোলিংয়ে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। বিদায় দেন অধিনায়ক বালবার্নিকে। তার পর অবশ্য তিন তিনটি ক্যাচ মিস করেছে বাংলাদেশ। যার সুযোগ নিয়ে আইরিশরা দ্বিতীয় উইকেটে পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি গড়েছে। 

তিন ক্যাচের মধ্যে নাহিদের বলে দুবার বেঁচেছেন স্টার্লিং। তখন স্কোর ছিল ৮ ও ১০। ১০ রানে হাসান মাহমুদের বলে একবার জীবন পান ক্যাড কারমাইকেলও। জীবন পেয়েই তার পর দুজনে মিলে ১৩ ওভারে যোগ করেছেন ১ উইকেটে ৬২ রান। 
টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামলেও প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই আঘাত হেনেছেন পেসার হাসান মাহমুদ। তার বলে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন ওপেনার ও অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি (০)। তিনি রিভিউ নিয়েও অবশ্য রক্ষা পাননি। আয়ারল্যান্ড প্রথম উইকেট হারায় শূন্য রানে। 
সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে শুরুতেই টস হেরেছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে সফরকারী আয়ারল্যান্ড। 

২০১৭ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর থেকে এটি আইরিশদের মাত্র একাদশতম টেস্ট। এর আগে তারা তিনটি জিতেছে, হেরেছে সাতটি। এই সিরিজ দিয়ে ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার তারা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলছে। এর আগেরবার ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সর্বশেষ তারা বাংলাদেশে মুখোমুখি হয়েছিল ২০২৩ সালের এপ্রিলে মিরপুরে। সেখানে তারা চার দিনের মধ্যেই হেরে যায়। তবে সেই পরাজয়ের পর আয়ারল্যান্ড আরও ছয়টি টেস্ট খেলেছে, যার মধ্যে সাম্প্রতিক তিনটিতেই জয় পেয়েছে তারা।

একাদশে কারা: 

বাংলাদেশের হয়ে বামহাতি স্পিনার হাসান মুরাদের টেস্ট অভিষেক হচ্ছে আজ। এর আগে শুধু টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন। 

আইরিশ দলেও অভিষেক হচ্ছে দুজনের। তারা হলেন জর্ডান নিল ও কেড কারমাইকেল। আইরিশদের হয়ে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে অভিষেক হচ্ছে জর্ডানের। 

বাংলাদেশ একাদশ : সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মেহেদী হাসান, তাইজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, রাহিদ রানা ও হাসান মুরাদ। 

আয়ারল্যান্ড একাদশ: অ্যান্ডি বালবার্নি (অধিনায়ক), পল স্টার্লিং, কেড কারমাইকেল, হ্যারি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্ফার, লরকান টাকান (উইকেট), জর্ডান নিল, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, ব্যারি ম্যাকার্থি, ম্যাথু হামফ্রিজ, ক্রেইগ ইয়াং