CKEditor 5 Sample
ঢাকা ২১ নভেম্বর, ২০২৫

ইসলামের দৃষ্টিতে ভিক্ষাবৃত্তি ঘৃণ্য কাজ

#
news image

সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি অনেক বেড়ে গেছে। সুস্থ-সবল, সুঠাম দেহের অধিকারী মানুষও; কি পুরুষ বা কি নারী- লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে দেদার ভিক্ষা করছে। একটু খেটে খেতে তারা নারাজ। পুঁজিহীন এই ব্যবসায় নেমে রাতারাতি ধনী হয়ে যাচ্ছে। সমাজে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বত্র এসব দৃশ্য চোখে পড়ে।
ইসলামের দৃষ্টিতে ভিক্ষাবৃত্তি ঘৃণ্য ও লজ্জাজনক একটি পেশা। মানবতাবোধসম্পন্ন কোনো মানুষ এ ঘৃণ্য কাজ পছন্দ করে না। কেননা ভিক্ষুকের হাত নিচে থাকে। আর নিচের হাত সর্বদা নিকৃষ্ট ও তুচ্ছ হয়। হাদিসে এসেছে, হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) একদা মিম্বরের ওপর থাকা অবস্থায় সদকা করা ও ভিক্ষা করা থেকে বেঁচে থাকা প্রসঙ্গে বয়ান করতে গিয়ে বলেন, ওপরের হাত নিচের হাত অপেক্ষা উত্তম। ওপরের হাত দাতার, আর নিচের হাত হলো ভিক্ষুকের’ (বুখারি : ১৪২৯)। অন্য হাদিসে দান করা ও দান গ্রহণ করার দৃষ্টিকোণ থেকে হাতগুলোকে তিনভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। হাদিসের বর্ণনানুযায়ী, হজরত মালিক ইবনে নাদলাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, দানের হাত তিন প্রকার। এক. আল্লাহর হাত সবার ওপরে, দুই. অতঃপর দানকারীর হাত এবং তিন. ভিক্ষার হাত সবার নিচে। কাজেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দান করো এবং প্রবৃত্তির কাছে অক্ষম হয়ো না।’ (আবু দাউদ : ১৬৪৯; মুসনাদে আহমদ : ১৫৮৯০)
কোনো ব্যক্তি যদি প্রয়োজন ছাড়া অভ্যাসগতভাবে মানুষের কাছে হাত পাতে, পরকালে সে এমনভাবে উঠবে যে, তার মুখে কোনো গোশত থাকবে না। মূলত তার অপমান হিসেবে তা হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা থেকে শুনেছেন, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি অনবরত লোকের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করতে থাকবে। পরিণামে কেয়ামতের দিন যখন সে উপস্থিত হবে তার মুখমণ্ডলে গোশতের কোনো টুকরা থাকবে না’ (মুসলিম : ১০৩)। তার চেয়ে আরও জঘন্য হলো, যে ভিক্ষুক সে কেবল ভিক্ষা নয় বরং আগুনের ফুলকি ভিক্ষা করছে। তাই যদি কেউ অপারগ অবস্থায় ভিক্ষা করে তা হলে তার উচিত হবে যথাসম্ভব কম করে ভিক্ষা করা। 
হাদিসের ভাষ্যমতে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি অভাবের তাড়না ছাড়া নিজের সম্পদ বাড়ানোর জন্য মানুষের কাছে সম্পদ ভিক্ষা করে বেড়ায় মূলত সে আগুনের ফুলকি ভিক্ষা করছে। কাজেই তার ভেবে দেখা উচিত সে বেশি নেবে না কম নেবে।’ (মুসলিম : ১০৫)
ভিক্ষা করার চেয়ে স্বশ্রমে উপার্জন করে জীবিকা অর্জন করা অনেক শ্রেয়। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) ভিক্ষা করার চেয়ে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করে জীবনযাপন করা অধিক উত্তম বলে উৎসাহিত করেছেন। হাদিসের বর্ণনানুযায়ী, ‘হজরত জুবাইর ইবনে আওয়াম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমাদের কারও এক বোঝা কাঠ সংগ্রহ করে তা নিজ পিঠে বহন করে আনা এবং বিক্রি করা ভিক্ষা করার চেয়ে উত্তম। সে কারও কাছে ভিক্ষা চাইবে আর লোকে হয়তো তাকে কিছু দেবে অথবা দেবে না’ (বুখারি : ১৪৭১)। তারা যদি ভিক্ষাবৃত্তির শাস্তি সম্পর্কে অবগত হতো তা হলে এ নিকৃষ্ট কাজ থেকে বিরত থেকে পরিশ্রম করে উপার্জন করত। হাদিসের বর্ণনামতে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ভিক্ষুক যদি ভিক্ষায় কী শাস্তি আছে তা জানত, তা হলে সে ভিক্ষা করত না।’ (তাবারানি : ১২৬১৬)

ধর্ম ডেস্ক

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫,  6:35 PM

news image

সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি অনেক বেড়ে গেছে। সুস্থ-সবল, সুঠাম দেহের অধিকারী মানুষও; কি পুরুষ বা কি নারী- লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে দেদার ভিক্ষা করছে। একটু খেটে খেতে তারা নারাজ। পুঁজিহীন এই ব্যবসায় নেমে রাতারাতি ধনী হয়ে যাচ্ছে। সমাজে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বত্র এসব দৃশ্য চোখে পড়ে।
ইসলামের দৃষ্টিতে ভিক্ষাবৃত্তি ঘৃণ্য ও লজ্জাজনক একটি পেশা। মানবতাবোধসম্পন্ন কোনো মানুষ এ ঘৃণ্য কাজ পছন্দ করে না। কেননা ভিক্ষুকের হাত নিচে থাকে। আর নিচের হাত সর্বদা নিকৃষ্ট ও তুচ্ছ হয়। হাদিসে এসেছে, হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) একদা মিম্বরের ওপর থাকা অবস্থায় সদকা করা ও ভিক্ষা করা থেকে বেঁচে থাকা প্রসঙ্গে বয়ান করতে গিয়ে বলেন, ওপরের হাত নিচের হাত অপেক্ষা উত্তম। ওপরের হাত দাতার, আর নিচের হাত হলো ভিক্ষুকের’ (বুখারি : ১৪২৯)। অন্য হাদিসে দান করা ও দান গ্রহণ করার দৃষ্টিকোণ থেকে হাতগুলোকে তিনভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। হাদিসের বর্ণনানুযায়ী, হজরত মালিক ইবনে নাদলাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, দানের হাত তিন প্রকার। এক. আল্লাহর হাত সবার ওপরে, দুই. অতঃপর দানকারীর হাত এবং তিন. ভিক্ষার হাত সবার নিচে। কাজেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দান করো এবং প্রবৃত্তির কাছে অক্ষম হয়ো না।’ (আবু দাউদ : ১৬৪৯; মুসনাদে আহমদ : ১৫৮৯০)
কোনো ব্যক্তি যদি প্রয়োজন ছাড়া অভ্যাসগতভাবে মানুষের কাছে হাত পাতে, পরকালে সে এমনভাবে উঠবে যে, তার মুখে কোনো গোশত থাকবে না। মূলত তার অপমান হিসেবে তা হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা থেকে শুনেছেন, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি অনবরত লোকের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করতে থাকবে। পরিণামে কেয়ামতের দিন যখন সে উপস্থিত হবে তার মুখমণ্ডলে গোশতের কোনো টুকরা থাকবে না’ (মুসলিম : ১০৩)। তার চেয়ে আরও জঘন্য হলো, যে ভিক্ষুক সে কেবল ভিক্ষা নয় বরং আগুনের ফুলকি ভিক্ষা করছে। তাই যদি কেউ অপারগ অবস্থায় ভিক্ষা করে তা হলে তার উচিত হবে যথাসম্ভব কম করে ভিক্ষা করা। 
হাদিসের ভাষ্যমতে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি অভাবের তাড়না ছাড়া নিজের সম্পদ বাড়ানোর জন্য মানুষের কাছে সম্পদ ভিক্ষা করে বেড়ায় মূলত সে আগুনের ফুলকি ভিক্ষা করছে। কাজেই তার ভেবে দেখা উচিত সে বেশি নেবে না কম নেবে।’ (মুসলিম : ১০৫)
ভিক্ষা করার চেয়ে স্বশ্রমে উপার্জন করে জীবিকা অর্জন করা অনেক শ্রেয়। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) ভিক্ষা করার চেয়ে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করে জীবনযাপন করা অধিক উত্তম বলে উৎসাহিত করেছেন। হাদিসের বর্ণনানুযায়ী, ‘হজরত জুবাইর ইবনে আওয়াম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমাদের কারও এক বোঝা কাঠ সংগ্রহ করে তা নিজ পিঠে বহন করে আনা এবং বিক্রি করা ভিক্ষা করার চেয়ে উত্তম। সে কারও কাছে ভিক্ষা চাইবে আর লোকে হয়তো তাকে কিছু দেবে অথবা দেবে না’ (বুখারি : ১৪৭১)। তারা যদি ভিক্ষাবৃত্তির শাস্তি সম্পর্কে অবগত হতো তা হলে এ নিকৃষ্ট কাজ থেকে বিরত থেকে পরিশ্রম করে উপার্জন করত। হাদিসের বর্ণনামতে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ভিক্ষুক যদি ভিক্ষায় কী শাস্তি আছে তা জানত, তা হলে সে ভিক্ষা করত না।’ (তাবারানি : ১২৬১৬)