ঐশ্বর্য বিশ্বাস,রাবি
১৮ অক্টোবর, ২০২৫, 6:08 PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ভবনের প্রতিবাদী লেখাগুলো ঢাকা পড়েছে নতুন রঙয়ের ছাপে। সেখানে দীর্ঘদিন যাবত কর্মকাণ্ড চালানো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও ছেড়ে দিয়েছে নিজেদের কার্যালয়। ভবনের কক্ষে কক্ষে চলছে রংমিস্ত্রির তুলির ছাপের মহাযজ্ঞ। গত চারদিন ধরে চলা কাজ এখন শেষের দিকে। দ্রুতই কক্ষগুলোতে কার্যক্রম শুরু করবে তিন যুগ পরে নির্বাচিত নেতারা। শুরুতেই নিজেদের মধ্যে সভা করে ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ শুরু করবেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাকসু ভবনের দেয়ালের দেয়ালে এক সময়ে লেখা থাকত 'রাকসু বাস্তবায়ন করো', 'শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করো' ইত্যাদি। তিন যুগ পরে বাস্তবায়িত হয়েছে সেই দাবি। গত তিন যুগ ধরে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো কার্যক্রম চালাতো এই কক্ষগুলোতে। তারাও ছেড়ে দিয়েছে তাদের আপন আলয়। এখন থেকে এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু্র অপেক্ষায় আছেন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরা।
তাদের কার্যালয় হস্তান্তর করতে চলছে কক্ষগুলো পরিস্কার, দেয়ালের রঙয়ের কাজ। ভবনের ভাঙাচোরা অংশগুলো মেরামতসহ পুরোদমে চলছে ধোয়া-মোছার কাজ। দেওয়ালে ছাপ পড়েছে নতুন রঙয়ের, দেওয়া হয়েছে নতুন বৈদ্যুতিক বাতি। একদম নতুন সাজে প্রস্তুত হচ্ছে রাকসু ভবন।
দ্বিতল ভবনের দুই তলার দক্ষিন পাশের একটি প্রসস্থ কক্ষে কার্যালয় হবে সহ-সভাপতির (ভিপি) কার্যালয়। একই তলার পূর্ব পাশের আরেকটি প্রশস্ত কক্ষে নিজ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন নির্বাচিত জিএস। এ ছাড়া বাকী ৮টি কক্ষে কার্যক্রম চালাবেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।
ইশতেহার নিয়ে কাজ শুরু করতে চান নির্বাচিতরা
দীর্ঘ তিন যুগ পরে শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে তাদের প্রতিনিধি। এ বারের নির্বাচনে প্রতিনিধিরা ভোটের আগে শিক্ষার্থীদের এই দীর্ঘ সময় ধরে জমা হওয়া আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে নানা ইশতেহার দিয়েছেন। সেই প্রতিশ্রুতি নিয়েই দ্রুত কাজ শুরু করতে চান তারা। অন্তত ৫ জন কেন্দ্রীয় সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তারা বলেন, 'শিক্ষার্থীদের নানান প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি আমাদের ছিলো। সেগুলো নিয়েই আমরা কাজ শুরু করতে চাই।
নব নির্বাচিত ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ দেশ ঢাকার সময়কে বলেন, 'শিক্ষার্থী তাদের ভোট দিয়ে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা তাদের অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। এখন আমরা শিক্ষার্থীদের আস্হা ও আমাদের ইশতেহার অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করতে চাই, ইনশাআল্লাহ।'
জিএস সালাহউদ্দীন আম্মারও নির্বাচিত সকল বিজয়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কার্যপন্থা তৈরি করতে চান। তিনি ঢাকার সময়কে বলেন, 'আমরা যারা নির্বাচিত হয়েছি তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসতে চাই। এই আলোচনাতে আমরা আমাদের সকলের ইশতেহার বাস্তবায়নে কার্যকর পন্থা খুজে বের করতে এবং কাজ শুরু করতে চাই।
ভবন ছেড়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন রাকসুর কার্যকারিতা না থাকায় বিভিন্ন সময়ে ভবনে ঠাঁই পেয়েছিল অন্তত ১০টি সংগঠন। দ্বিতল ভবনটির নিচতলায় ছিলো সমকাল নাট্যচক্র, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ড্রামা অ্যাসোসিয়েশন, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার রাজশাহী, উদীচী সাংস্কৃতিক সংসদ, অরণি সাংস্কৃতিক সংসদ, অ্যাসোসিয়েশন ফর কালচার অ্যান্ড এডুকেশন (এস) ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের কার্যালয়। দ্বিতীয় তলায় কার্যক্রম চালায় অনুশীলন নাট্যদল, সমগীত, তীর্থক নাটক, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংসদ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি।
ভবনের আসল 'মালিক' ফেরায় তারা ছেড়ে দিয়েছেন তাদের কার্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় টিএসসি না থাকায় তাদের পড়তে হয়েছে বিড়ম্বনায়। বর্তমানে তাদের আশ্রয় হয়েছে মন্নুজান হলের পাশের পুরাতন শেখ রাসেল স্কুলের 'পরিত্যক্ত' ভবনে।
তবে পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন করে সংগঠগুলোকে স্থায়ী আবাসন দিতে কাউ করতে চান রাকসুর নব নির্বাচিত জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। তিনি বলেন, ভবনে দীর্ঘদিন যাবত কার্যক্রম চালানো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন করে স্থায়ী পুনর্বাসন করার প্রতিশ্রুতি আমাদের ছিলো। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চাই।
ঐশ্বর্য বিশ্বাস,রাবি
১৮ অক্টোবর, ২০২৫, 6:08 PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ভবনের প্রতিবাদী লেখাগুলো ঢাকা পড়েছে নতুন রঙয়ের ছাপে। সেখানে দীর্ঘদিন যাবত কর্মকাণ্ড চালানো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও ছেড়ে দিয়েছে নিজেদের কার্যালয়। ভবনের কক্ষে কক্ষে চলছে রংমিস্ত্রির তুলির ছাপের মহাযজ্ঞ। গত চারদিন ধরে চলা কাজ এখন শেষের দিকে। দ্রুতই কক্ষগুলোতে কার্যক্রম শুরু করবে তিন যুগ পরে নির্বাচিত নেতারা। শুরুতেই নিজেদের মধ্যে সভা করে ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ শুরু করবেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাকসু ভবনের দেয়ালের দেয়ালে এক সময়ে লেখা থাকত 'রাকসু বাস্তবায়ন করো', 'শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করো' ইত্যাদি। তিন যুগ পরে বাস্তবায়িত হয়েছে সেই দাবি। গত তিন যুগ ধরে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো কার্যক্রম চালাতো এই কক্ষগুলোতে। তারাও ছেড়ে দিয়েছে তাদের আপন আলয়। এখন থেকে এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু্র অপেক্ষায় আছেন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরা।
তাদের কার্যালয় হস্তান্তর করতে চলছে কক্ষগুলো পরিস্কার, দেয়ালের রঙয়ের কাজ। ভবনের ভাঙাচোরা অংশগুলো মেরামতসহ পুরোদমে চলছে ধোয়া-মোছার কাজ। দেওয়ালে ছাপ পড়েছে নতুন রঙয়ের, দেওয়া হয়েছে নতুন বৈদ্যুতিক বাতি। একদম নতুন সাজে প্রস্তুত হচ্ছে রাকসু ভবন।
দ্বিতল ভবনের দুই তলার দক্ষিন পাশের একটি প্রসস্থ কক্ষে কার্যালয় হবে সহ-সভাপতির (ভিপি) কার্যালয়। একই তলার পূর্ব পাশের আরেকটি প্রশস্ত কক্ষে নিজ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন নির্বাচিত জিএস। এ ছাড়া বাকী ৮টি কক্ষে কার্যক্রম চালাবেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।
ইশতেহার নিয়ে কাজ শুরু করতে চান নির্বাচিতরা
দীর্ঘ তিন যুগ পরে শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে তাদের প্রতিনিধি। এ বারের নির্বাচনে প্রতিনিধিরা ভোটের আগে শিক্ষার্থীদের এই দীর্ঘ সময় ধরে জমা হওয়া আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে নানা ইশতেহার দিয়েছেন। সেই প্রতিশ্রুতি নিয়েই দ্রুত কাজ শুরু করতে চান তারা। অন্তত ৫ জন কেন্দ্রীয় সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তারা বলেন, 'শিক্ষার্থীদের নানান প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি আমাদের ছিলো। সেগুলো নিয়েই আমরা কাজ শুরু করতে চাই।
নব নির্বাচিত ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ দেশ ঢাকার সময়কে বলেন, 'শিক্ষার্থী তাদের ভোট দিয়ে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা তাদের অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। এখন আমরা শিক্ষার্থীদের আস্হা ও আমাদের ইশতেহার অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করতে চাই, ইনশাআল্লাহ।'
জিএস সালাহউদ্দীন আম্মারও নির্বাচিত সকল বিজয়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কার্যপন্থা তৈরি করতে চান। তিনি ঢাকার সময়কে বলেন, 'আমরা যারা নির্বাচিত হয়েছি তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসতে চাই। এই আলোচনাতে আমরা আমাদের সকলের ইশতেহার বাস্তবায়নে কার্যকর পন্থা খুজে বের করতে এবং কাজ শুরু করতে চাই।
ভবন ছেড়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন রাকসুর কার্যকারিতা না থাকায় বিভিন্ন সময়ে ভবনে ঠাঁই পেয়েছিল অন্তত ১০টি সংগঠন। দ্বিতল ভবনটির নিচতলায় ছিলো সমকাল নাট্যচক্র, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ড্রামা অ্যাসোসিয়েশন, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার রাজশাহী, উদীচী সাংস্কৃতিক সংসদ, অরণি সাংস্কৃতিক সংসদ, অ্যাসোসিয়েশন ফর কালচার অ্যান্ড এডুকেশন (এস) ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের কার্যালয়। দ্বিতীয় তলায় কার্যক্রম চালায় অনুশীলন নাট্যদল, সমগীত, তীর্থক নাটক, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংসদ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি।
ভবনের আসল 'মালিক' ফেরায় তারা ছেড়ে দিয়েছেন তাদের কার্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় টিএসসি না থাকায় তাদের পড়তে হয়েছে বিড়ম্বনায়। বর্তমানে তাদের আশ্রয় হয়েছে মন্নুজান হলের পাশের পুরাতন শেখ রাসেল স্কুলের 'পরিত্যক্ত' ভবনে।
তবে পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন করে সংগঠগুলোকে স্থায়ী আবাসন দিতে কাউ করতে চান রাকসুর নব নির্বাচিত জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। তিনি বলেন, ভবনে দীর্ঘদিন যাবত কার্যক্রম চালানো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন করে স্থায়ী পুনর্বাসন করার প্রতিশ্রুতি আমাদের ছিলো। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চাই।