রাবি প্রতিনিধি
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, 7:13 AM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা ইস্যুতে উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা তিন ঘন্টা যাবৎ অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। এর আগে তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার, শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে পৌনে ৭টা পর্যন্ত উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর মাহবুবর রহমান, রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদসহ শিক্ষক-কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে পোষ্যকোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে প্রশাসন ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন একদল শিক্ষার্থী। আজ বিকেল সোয়া ৩টার দিকে প্রশাসন ভবন থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাসভবনে রওনা দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন। এ সময় সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার ও শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়া শুভ’র নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী তার গাড়ি আটকে ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্যকোটা বাদ দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় তারা উপ-উপাচার্যের গাড়ির ওপর ‘প্রতিকী ভিক্ষা’ দেন। এর ২০ মিনিট পরে উপ-উপাচার্য গাড়ি থেকে নেমে হেটেই বাসভবনের দিকে রওনা দেন। তখন শিক্ষার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে তার পিছু নেন।
তিনি বাসভবনের ফটকে পৌঁছানোর আগেই সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাদের ফটকের সামনের স্থান ত্যাগের অনুরোধ করেন প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পোষ্যকোটার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ফটকের অবস্থান ছাড়বেন না জানান। পরে বিকেল পৌনে ৪টায় উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরসহ কয়েকজন শিক্ষক রওনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাব অর্থাৎ জুবেরী ভবনের উদ্দেশে। এ সময় শিক্ষার্থীরা তার পিছু নেয় এবং তিনি পৌছানোর আগেই জুবেরী ভবনের ফটকের অবস্থান নেন। ২০/২৫ মিনিটের অপেক্ষা শেষে উপ-উপাচার্য প্যারিস রোডের দিকে হাটা শুরু করেন। সেখান থেকে প্যারিস রোড এসে কিছুদূর আগালে শিক্ষার্থীরা আবারও স্লোগান দিয়ে তার পিছু নেন। পরে প্যারিস রোডে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরের সঙ্গে যোগ দেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক খলিলুর রহমান, প্রক্টরিয়াল বডির কয়েকজন সদস্যসহ কয়েককজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা।
তাদের উপস্থিতিতে উপ-উপাচার্য পুনরায় জুবেরী ভবনে ফেরত আসেন। বেলা সোয়া ৪টায় ভবনের ফটকে শিক্ষার্থীরা হাতে হাত দিয়ে বাধা তৈরি করেন। তখন শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়েই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক পর্যায়ে জুবেরী ভবনের পশ্চিম ব্লকের সিড়ি দিয়ে দোতলায় উঠার চেষ্টা করেন উপ-উপাচার্য। সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠার সময়ে এক শিক্ষার্থী তার হাত টেনে ধরলে তিনি সিড়ির ওপর পড়ে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার সহযোগিতায় উঠে দাড়ান এবং ওপরে ওঠার চেষ্টা করেন। ওই শিক্ষার্থী আবারও উপ-উপাচার্যকে টেনে ধরেন। তখন উপ-উপাচার্যসহ তিনজন মিলে ওই শিক্ষার্থীর গলা টিপে ধরেন এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে সিড়িতেই ফেলে দোতলার একটি কক্ষে অবস্থান নেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উপ-উপাচার্য ওই কক্ষে অবস্থান করছেন এবং শিক্ষার্থীরা ভবনের ব্লকে এবং প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় তাদের সঙ্গে সংহতি জানান বামপন্থী ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা। এ দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সালাহউদ্দিন আম্মার, আল শাহরিয়া শুভসহ এক কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য স্যারকে অবরুদ্ধ করে তাঁর বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে আমরা জুবেরী ভবনের লাউঞ্জে বসি। সেখানে শিক্ষার্থীরা আবারও আমাদের বাধা দেয়। আমরা ফিরে গিয়ে পুনরায় আসার পর ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে তারা আবারও বাধা দেয়। এসময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।’ ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার ঘড়ি ও অর্থ কেঁড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
রাবি প্রতিনিধি
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, 7:13 AM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা ইস্যুতে উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা তিন ঘন্টা যাবৎ অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। এর আগে তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার, শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে পৌনে ৭টা পর্যন্ত উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর মাহবুবর রহমান, রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদসহ শিক্ষক-কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে পোষ্যকোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে প্রশাসন ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন একদল শিক্ষার্থী। আজ বিকেল সোয়া ৩টার দিকে প্রশাসন ভবন থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাসভবনে রওনা দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন। এ সময় সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার ও শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়া শুভ’র নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী তার গাড়ি আটকে ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্যকোটা বাদ দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় তারা উপ-উপাচার্যের গাড়ির ওপর ‘প্রতিকী ভিক্ষা’ দেন। এর ২০ মিনিট পরে উপ-উপাচার্য গাড়ি থেকে নেমে হেটেই বাসভবনের দিকে রওনা দেন। তখন শিক্ষার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে তার পিছু নেন।
তিনি বাসভবনের ফটকে পৌঁছানোর আগেই সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাদের ফটকের সামনের স্থান ত্যাগের অনুরোধ করেন প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পোষ্যকোটার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ফটকের অবস্থান ছাড়বেন না জানান। পরে বিকেল পৌনে ৪টায় উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরসহ কয়েকজন শিক্ষক রওনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাব অর্থাৎ জুবেরী ভবনের উদ্দেশে। এ সময় শিক্ষার্থীরা তার পিছু নেয় এবং তিনি পৌছানোর আগেই জুবেরী ভবনের ফটকের অবস্থান নেন। ২০/২৫ মিনিটের অপেক্ষা শেষে উপ-উপাচার্য প্যারিস রোডের দিকে হাটা শুরু করেন। সেখান থেকে প্যারিস রোড এসে কিছুদূর আগালে শিক্ষার্থীরা আবারও স্লোগান দিয়ে তার পিছু নেন। পরে প্যারিস রোডে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরের সঙ্গে যোগ দেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক খলিলুর রহমান, প্রক্টরিয়াল বডির কয়েকজন সদস্যসহ কয়েককজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা।
তাদের উপস্থিতিতে উপ-উপাচার্য পুনরায় জুবেরী ভবনে ফেরত আসেন। বেলা সোয়া ৪টায় ভবনের ফটকে শিক্ষার্থীরা হাতে হাত দিয়ে বাধা তৈরি করেন। তখন শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়েই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক পর্যায়ে জুবেরী ভবনের পশ্চিম ব্লকের সিড়ি দিয়ে দোতলায় উঠার চেষ্টা করেন উপ-উপাচার্য। সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠার সময়ে এক শিক্ষার্থী তার হাত টেনে ধরলে তিনি সিড়ির ওপর পড়ে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার সহযোগিতায় উঠে দাড়ান এবং ওপরে ওঠার চেষ্টা করেন। ওই শিক্ষার্থী আবারও উপ-উপাচার্যকে টেনে ধরেন। তখন উপ-উপাচার্যসহ তিনজন মিলে ওই শিক্ষার্থীর গলা টিপে ধরেন এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে সিড়িতেই ফেলে দোতলার একটি কক্ষে অবস্থান নেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উপ-উপাচার্য ওই কক্ষে অবস্থান করছেন এবং শিক্ষার্থীরা ভবনের ব্লকে এবং প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় তাদের সঙ্গে সংহতি জানান বামপন্থী ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা। এ দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সালাহউদ্দিন আম্মার, আল শাহরিয়া শুভসহ এক কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য স্যারকে অবরুদ্ধ করে তাঁর বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে আমরা জুবেরী ভবনের লাউঞ্জে বসি। সেখানে শিক্ষার্থীরা আবারও আমাদের বাধা দেয়। আমরা ফিরে গিয়ে পুনরায় আসার পর ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে তারা আবারও বাধা দেয়। এসময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।’ ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার ঘড়ি ও অর্থ কেঁড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।