আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ আগস্ট, ২০২৫, 7:29 PM
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর দুই দিন আগে, বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ইউরোপীয় নেতারা। ভার্চুয়াল ওই বৈঠকের পর সতর্কভাবে আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করেছেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ইউরোপীয়দের জানিয়েছেন, শীর্ষ বৈঠকে তার মূল লক্ষ্য হবে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ জানিয়েছেন, যেকোনও আঞ্চলিক বিরোধ ভলোদিমির জেলেনস্কির অংশগ্রহণের মাধ্যমেই নির্ধারিত হতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চুক্তির অংশ হতে হবে বলে সম্মত হয়েছেন ট্রাম্প। মাক্রোঁ আরও বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে তার “উদ্দেশ্য পরিষ্কার” হয়েছে এবং ইউরোপীয়দের “আমাদের প্রত্যাশা জানানোর সুযোগ” হয়েছে। ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ডের নেতাদের পাশাপাশি ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডের লেয়েন ও ন্যাটো প্রধান মার্ক রুটের সঙ্গে কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার লন্ডনে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে, তাদের সাক্ষাৎ হবে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে। আলাস্কায় তড়িঘড়ি আয়োজিত শীর্ষ বৈঠক থেকে ইউরোপীয়দের কার্যত বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই বুধবারের ফোনালাপ ছিল ইউক্রেনের স্বার্থ ও ইউরোপের নিরাপত্তার ইস্যুটি ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দেওয়ার শেষ প্রচেষ্টা। ইউরোপীয় নেতাদের মতে, কিছুটা হলেও কাজ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প বৈঠকটিকে “১০-এর মধ্যে ১০” রেটিং দেন এবং বলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ না করে, তবে “খুবই কঠোর” পরিণতির মুখে পড়তে হবে। তিনি আরও জানান, শুক্রবারের বৈঠক ভালোভাবে শেষ হলে, তিনি পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে দ্রুত একটি “দ্বিতীয় বৈঠক” আয়োজনের চেষ্টা করবেন। তবুও বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, যেকোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে কিয়েভকে থাকতে হবে—যা তাদের অন্তর্নিহিত উদ্বেগ প্রকাশ করে যে পুতিন শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পকে রাজি করিয়ে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে পারেন। পোল্যান্ডের ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইউরোপকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বোঝাতে হবে যে রাশিয়ার ওপর ভরসা করা যায় না। আর জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ র্মেৎস বলেছেন, নেতারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পরবর্তী বৈঠক হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে থাকতে হবে। মার্কিন-রাশিয়া শীর্ষ বৈঠক ঘোষণার পর থেকে ট্রাম্প কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে “ভূমি বিনিময়” প্রসঙ্গে কয়েকবার মন্তব্য করেছেন-যা ইউক্রেন ও আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যে, তিনি হয়ত পুতিনের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী ইউক্রেনের বিশাল অংশ ছেড়ে দেওয়ার দিকে এগোচ্ছেন। কারণ বুধবার সকালেও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলেক্সেই ফাদেয়েভ আবারও বলেছেন, ২০২৪ সালের জুনে পুতিন যে শর্ত জানিয়েছিলেন, তাতে কোনও পরিবর্তন আসেনি। সেসময় পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেন সরকার রাশিয়ার আংশিকভাবে অধিকৃত চারটি অঞ্চল—দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া—থেকে সরে গেলেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এছাড়া ইউক্রেনকে ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদানের প্রচেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যাগ করতে হবে। তবে রাশিয়ার এই দাবিদাওয়া কিয়েভ বা তার ইউরোপীয় অংশীদাররা কার্যকর বলে মনে করে না। জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়াকে যদি কোনও অঞ্চল রাখতে দেওয়া হয়, তবে মস্কো সেটি ভবিষ্যৎ আক্রমণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করবে। ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর জারি করা বিবৃতিতে কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা বলেছেন, এ ধরনের নিশ্চয়তার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে এবং স্যার কিয়ার বলেছেন, এ বিষয়ে “বাস্তব অগ্রগতি” হয়েছে। তিনি ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, “তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সংঘাত চলছে এবং আমরা কার্যকর সমাধান বা কার্যকর যুদ্ধবিরতির কাছাকাছি যাইনি। এখন আমরা সেই সুযোগ পাচ্ছি, প্রেসিডেন্ট যে কাজ করেছেন তার জন্য। এদিকে ফ্রন্টলাইনে রাশিয়ার গ্রীষ্মকালীন আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। নিজের পক্ষ থেকে ট্রাম্পও স্বীকার করেছেন, পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক হলেও হয়তো তাকে ইউক্রেনে বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধে রাজি করানো সম্ভব নাও হতে পারে। ট্রাম্প বলেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলে বাড়ি ফিরে দেখি, একটি রকেট নার্সিং হোম বা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আঘাত করেছে এবং মানুষ রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ আগস্ট, ২০২৫, 7:29 PM
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর দুই দিন আগে, বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ইউরোপীয় নেতারা। ভার্চুয়াল ওই বৈঠকের পর সতর্কভাবে আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করেছেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ইউরোপীয়দের জানিয়েছেন, শীর্ষ বৈঠকে তার মূল লক্ষ্য হবে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ জানিয়েছেন, যেকোনও আঞ্চলিক বিরোধ ভলোদিমির জেলেনস্কির অংশগ্রহণের মাধ্যমেই নির্ধারিত হতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চুক্তির অংশ হতে হবে বলে সম্মত হয়েছেন ট্রাম্প। মাক্রোঁ আরও বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে তার “উদ্দেশ্য পরিষ্কার” হয়েছে এবং ইউরোপীয়দের “আমাদের প্রত্যাশা জানানোর সুযোগ” হয়েছে। ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ডের নেতাদের পাশাপাশি ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডের লেয়েন ও ন্যাটো প্রধান মার্ক রুটের সঙ্গে কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার লন্ডনে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে, তাদের সাক্ষাৎ হবে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে। আলাস্কায় তড়িঘড়ি আয়োজিত শীর্ষ বৈঠক থেকে ইউরোপীয়দের কার্যত বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই বুধবারের ফোনালাপ ছিল ইউক্রেনের স্বার্থ ও ইউরোপের নিরাপত্তার ইস্যুটি ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দেওয়ার শেষ প্রচেষ্টা। ইউরোপীয় নেতাদের মতে, কিছুটা হলেও কাজ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প বৈঠকটিকে “১০-এর মধ্যে ১০” রেটিং দেন এবং বলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ না করে, তবে “খুবই কঠোর” পরিণতির মুখে পড়তে হবে। তিনি আরও জানান, শুক্রবারের বৈঠক ভালোভাবে শেষ হলে, তিনি পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে দ্রুত একটি “দ্বিতীয় বৈঠক” আয়োজনের চেষ্টা করবেন। তবুও বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, যেকোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে কিয়েভকে থাকতে হবে—যা তাদের অন্তর্নিহিত উদ্বেগ প্রকাশ করে যে পুতিন শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পকে রাজি করিয়ে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে পারেন। পোল্যান্ডের ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইউরোপকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বোঝাতে হবে যে রাশিয়ার ওপর ভরসা করা যায় না। আর জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ র্মেৎস বলেছেন, নেতারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পরবর্তী বৈঠক হলে ইউক্রেনকে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে থাকতে হবে। মার্কিন-রাশিয়া শীর্ষ বৈঠক ঘোষণার পর থেকে ট্রাম্প কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে “ভূমি বিনিময়” প্রসঙ্গে কয়েকবার মন্তব্য করেছেন-যা ইউক্রেন ও আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যে, তিনি হয়ত পুতিনের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী ইউক্রেনের বিশাল অংশ ছেড়ে দেওয়ার দিকে এগোচ্ছেন। কারণ বুধবার সকালেও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলেক্সেই ফাদেয়েভ আবারও বলেছেন, ২০২৪ সালের জুনে পুতিন যে শর্ত জানিয়েছিলেন, তাতে কোনও পরিবর্তন আসেনি। সেসময় পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেন সরকার রাশিয়ার আংশিকভাবে অধিকৃত চারটি অঞ্চল—দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া—থেকে সরে গেলেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এছাড়া ইউক্রেনকে ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদানের প্রচেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যাগ করতে হবে। তবে রাশিয়ার এই দাবিদাওয়া কিয়েভ বা তার ইউরোপীয় অংশীদাররা কার্যকর বলে মনে করে না। জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়াকে যদি কোনও অঞ্চল রাখতে দেওয়া হয়, তবে মস্কো সেটি ভবিষ্যৎ আক্রমণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করবে। ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর জারি করা বিবৃতিতে কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা বলেছেন, এ ধরনের নিশ্চয়তার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে এবং স্যার কিয়ার বলেছেন, এ বিষয়ে “বাস্তব অগ্রগতি” হয়েছে। তিনি ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, “তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সংঘাত চলছে এবং আমরা কার্যকর সমাধান বা কার্যকর যুদ্ধবিরতির কাছাকাছি যাইনি। এখন আমরা সেই সুযোগ পাচ্ছি, প্রেসিডেন্ট যে কাজ করেছেন তার জন্য। এদিকে ফ্রন্টলাইনে রাশিয়ার গ্রীষ্মকালীন আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। নিজের পক্ষ থেকে ট্রাম্পও স্বীকার করেছেন, পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক হলেও হয়তো তাকে ইউক্রেনে বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধে রাজি করানো সম্ভব নাও হতে পারে। ট্রাম্প বলেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলে বাড়ি ফিরে দেখি, একটি রকেট নার্সিং হোম বা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে আঘাত করেছে এবং মানুষ রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।